ঢাকা অফিস : রেশমাকে নিয়ে বৃটিশ পত্রিকা মিররে প্রকাশিত রিপোর্টের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল চৌধুরী হাসান সরওয়ার্দী বলেছেন, ‘‘সেনাবাহিনী কচুপাতার পানি নয়। বিদেশী কোনো পত্রিকার কথায় অল্পতেই তা ধংস হয়ে যাবে না।’’ তিনি বলেন, ‘‘যারা রেশমা উদ্ধারকে সাজানো নাটক বলছেন তারা আসলে ষড়যন্ত্রকারী।’’
বুধবার বিকালে সচিবালয়ের তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “সানডে মিররের প্রতিবেদন সম্পূর্ণ মিথ্যা। মিররের সাংবাদিক ওই এলাকায় যাননি।এটা বাংলাদেশের মর্যাদা, সম্মান, আবেগ, অনুভূতির বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র।”
তিনি উদ্ধারের দুই মাস পরে রেশমাকে নিয়ে সানডে মিররের এ ধরণের প্রতিবেদন উপহাসেরই নামান্তর বলে মন্তব্য করেন।এ সময় তিনি সাংবাদিক সায়মন রাইটস এবং তার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি তাদের কাছ থেকে ক্ষতিপুরণের দাবি জানান। পাশাপাশি তার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে র করে সরকারকে প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা নেয়ার এমন প্রস্তাব করেন।
মেজর জেনারেল চৌধুরী হাসান সরওয়ার্দী বলেন, “এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সততাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে মিরর।”
জিওসি বলেন, “সেনাবাহিনীর সঙ্গে ফাউল খেলবেন না। অনেক সময় ফাউল খেললে সে আঘাত নিজেদের ওপরেই আসে। আসুন আমরা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সুনাম রক্ষা করি এবং বিদেশী যড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই।”
তিনি বলেন, ‘‘প্রতিবেদনে যাদের কথা বলা হয়েছে এ রকম কোনো ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেননি প্রতিবেদক সাইমন রাইটস। বরং তাদের কথা বলানোর জন্য টাকার প্রলোভন দেয়া হয়েছিল।’’
তিনি বলেন, “২৩ জুন দৈনিক আমার দেশ তাদের অনলাইন সংস্করণে ‘রানা প্লাজা ট্রাজেডি: রেশমা উদ্ধার নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এরপর গত ১ জুলাই বৃটেনের ট্যাবলয়েড পত্রিকা সানডে মিরর রেশমা উদ্ধারের ঘটনা ‘সাজানো’ বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।” মিররের বরাত দিয়ে বাংলাদেশর আটটি দৈনিকে ওই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় বলে সরওয়ার্দী জানান।
তিনি বলেন, ‘‘এ ধরণের অপচেষ্টার মাধ্যমে সেনাবাহিনীকে কন্ট্রোভার্শিয়াল করার চেষ্টা চলছে। রেশমাকে উদ্ধারের ঘটনা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে গল্প তৈরি এবং বিভিন্ন ব্লগে মন্তব্য করা হচ্ছে। যার অর্থ হচ্ছে সেনাবাহিনীর চেইন অব কমান্ড ও ঐতিহ্য নষ্ট করা।’’
জিওসি আরো বলেন, ‘‘এ প্রতিবেদন প্রতিরক্ষা বাহিনীর সততাকে প্রশ্নবৃদ্ধ করেছে। পাশাপাশি গার্মেন্ট শিল্পে আঘাত করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে।’’
রেশমাকে আইএসপির নিয়ন্ত্রণ করে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘সে আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। সে এখন একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে। আপনারা চাইলে তার সাথে দেখা করে কথা বলতে পারেন।’’
তিনি বলেন, ‘‘এনাম, লিপি আক্তার ও রোজী আক্তারের বরাত দিয়ে ওই দৈনিকে প্রতিবেদন করা হলেও এই তিনজন ওই প্রতিবেদকের সাথে কথা বলেননি।’’
জিওসি বলেন, ‘‘ওই সাংবাদিক ক্রিমিনাল অফেন্স করে গ্রেফতার হয়েছিলেন। আমি তার বিরুদ্ধে বেশি কিছু বলতে চাই না। তবে যে সেনাবাহিনীর ওপর ১৬ কোটি মানুষের আস্থা আছে, তারাই ওই উদ্ধার অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছে।’’
গত ২৪ এপ্রিল সাভারের নয় তলা ভবন রানা প্লাজা ধসে পড়ে। এ ঘটনায় এক হাজার ১৩১ জন নিহত হন। ভবন ধসের ১৭ দিন পর গত ১০ মে ধ্বংসস্তুপের মধ্য থেকে রেশমাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়, যা সারা বিশ্বেই আলোড়ন সৃষ্টি করে।